
Sub Category
dooars-barta

হস্তীশাবকের মাটি চাপা দেহ
হস্তীশাবকের মাটি চাপা দেহশনিবার মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় আলিপুরদুয়ার মাঝেরডাবরি চা বাগানে হস্তীশাবকের দেহ দেখতে পায় চা শ্রমিকেরা। শাবকটির চারটি পায়ের কিছুটা অংশ মাটির ওপর থাকলেও দেহের অধিকাংশই ছিলো মাটির নীচে। এরপর বণকর্মীদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে হস্তীশাবকটির দেহ উদ্ধার করে রাজাভাতখাওয়ায় নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের উদ্দেশ্যে, তারপর শাবকটির দেহ সৎকার করা হয়। শাবকটি মারা গেছে বুঝতে পেরে দলের হাতিরাই সম্ভবত মাটিচাপা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিছুদিন আগে হাসিমারার ভার্নাবাড়ি চা বাগানেও একি অবস্থায় হস্তীশাবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। হাতিদের এই ধরনের আচরন অস্বাভাবিক নয়, কারন দলবদ্ধভাবে চলার পথে হস্তীশাবকের মৃত্যুর বিষয়টি বুঝতে পারলে তারা নিজেরাই মাটি চাপা দিয়ে চলে যায়। তবে বুনো হাতির দলের এই রীতি অনেককেই অবাক করে দিয়েছে। তবে ভিড় জমিয়ে থাকা স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে মৃত্যুর কারন নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, আপাতত তিন ফুট গভীর নালাতে পরে গিয়েই হস্তীশাবকটির মৃত্যু হয়েছে বলে অধিকাংশের অনুমান।

হরিণ উদ্ধার
হরিণ উদ্ধার শনিবার সকালে ডুয়ার্সের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ঘোড়ামারা বিটের জঙ্গল থেকে লোকালয়ে বেড়িয়ে আসে হরিণ। শুয়োর তাড়া করলে একটি হরিণ ভয়ে দক্ষিণ চ্যাংমারির হেমাগুড়িতে প্রবেশ করে, তরুণ বাবুর বাড়ির খাটের তলায় আশ্রয় নেয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামবাসীরা তরুণ বাবুর বাড়িতে ভিড় জমাতে থাকে। তিনি নিজেও বিষয়টি বুঝতে পারেন নি, গ্রামবাসীরা দেখতে পেয়ে তাকে জানায়। তরুণ বসুমাতা বলেন প্রতিবেশীদের কথায় আমি ঘরে ঢুকে, খাটের তলায় দেখি একটি হরিণ লুকিয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে দরজা বন্ধ করে ঘোড়ামারা বিটে অফিসে ফোন করে নিজেই বিষয়টি জানাই।এরপর কামাখ্যাগুড়ি মোবাইল রেঞ্জ এবং ঘোড়ামারা বিটের বণকর্মীরা এসে হরিণ টিকে উদ্ধার করেন এবং জানান যে শারীরিক পরীক্ষার পর এই বার্কিং হরিণ টিকে রাজাভাতখাওয়া জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।

তিস্তারচরে তরমুজ চাষ
তিস্তারচরে তরমুজ চাষজলপাইগুড়ি ও ময়নাগুড়ির মাঝের সীমারেখা অর্থাৎ তিস্তা নদীর উভয়তীরের বালুচরে এক অন্যতম আকর্ষণ হলো তরমুজ চাষ। গ্রীষ্মকালীন একটি জনপ্রিয় ফল হলো তরমুজ। গরমে দেহ ও মনে শুধু প্রশান্তিই আনে না, এর সাথে পুষ্টি ও ভেষজগুণ সমৃদ্ধ তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য খাদ্য উপাদান রয়েছে তরমুজে। গরমের দিনে ঘামের সাথে দেহ থেকে প্রচুর লবণ ও জল বেরিয়ে যায়। তরমুজে প্রায় ৯৬ ভাগই জল এবং প্রচুর খনিজ লবণ থাকায় দেহে লবণ ও জলর ঘাটতি পূরণ করে। ফাল্গুন মাস থেকেই শুরু হয়ে যায় এই তরমুজের চাষ এরপর গ্রীষ্মকালে ডুয়ার্সের পর্যটকদের এক অন্যতম আকর্ষণে পরিনত হয় এই তরমুজ চাষ। চাষিদের কাছেও এই চাষ এক অন্যরকম তৃপ্তি প্রদান করে। তাই রোগ-পোকার আক্রমন সত্যেও, লাভ-ক্ষতি উপেক্ষা করে প্রতিবছর তারা এই চাষে উদ্যোগ নেয়। স্থানীয় মানুষেরাও এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসে তিস্তাতীরে।

জিতিয়া পূজা
জিতিয়া পূজালোকসংস্কৃতিআশ্বিন মাসে কৃষ্ণপক্ষে অষ্টমী তিথিতে হিন্দু শাস্ত্রমতে জীমূতবাহনের বা বিষ্ণু দেবতার পূজা প্রচলন রয়েছে। মালদহ জেলার মানিকচক ছারাও বাঁকুড়া বীরভূম,পুরলিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে মহিলারা উপবাস থেকে স্বামী সন্তানের কল্যান কামনায় জীমূতবাহনের পূজা করে থাকেন। প্রতিবেশী রাজ্য বিহার ঝারখন্ড, উড়িষ্যার বিভিন্ন প্রান্তে এই লোকসংস্কৃতি লক্ষ্য করা যায়। কথায় আছে জিতার ডালায় বোধন আসে। তাই জিতাষ্টমীতেই শুরু হয় বোধন,আর এর পনেরো দিন পর দূর্গাষ্টমী। উত্তরবঙ্গেও বিশেষত ডুয়ার্সের লোহরা, ওঁরাও প্রভৃতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের স্ত্রীলোকেরা আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষে অষ্টমী তিথির দুদিন আগে থেকে নির্জলা উপবাস থাকে। উল্লেখ্য যিনি ব্রতী মহিলা তিনি থুতু পর্যন্ত না গিলে তিন দিন কাটান। তৃতীয় দিনে অর্থাৎ অষ্টমীর দিনে জিতিয়া পূজা করে থাকেন। জিতিয়া আসলে বিষ্ণু দেবতা। আদিবাসীরা বিষ্ণু দেবকে প্রকৃতি রূপে পূজা করে থাকেন। বুঝতে অসুবিধা নেই যে জিতিয়া পূজা পালন করা অত্যন্ত কষ্টকর ব্যাপার। অনেকে মিলে পূজা করা হলে নির্দিষ্ট মাঠে পিপুল (অশ্বত্থ) গাছের গোড়ায় পূজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র পারিবারিক পুজোর ক্ষেত্রে পিপুল (অশ্বত্থ) গাছের ডাল সংগ্রহ করে বাড়ির উঠোনে পুঁতে সেখানে পুজো করা হয়ে থাকে, কখনও ধান গাছ, আঁখ গাছও লক্ষ্য করা যায়। পুজোতে ডালপাতা সমেত শশাকে সন্তানজ্ঞান করে সধবা স্ত্রীলোকেরা সন্তানের ও স্বামীর মঙ্গল কামনা করে থাকেন। মাঠে স্থায়ী পিপুল গাছ তলায় পুজো হলে দেবতা ভাসান হয় না। তবে বাড়িতে পিপুল গাছের ডাল পুঁতে পুজো হলে পূজান্তে পূজাপ্রাপ্ত ডালকে নদীর বা পুষ্কুরিনীর জলে ভাসান দেওয়া হয়।

হাতি পুজো
ডুয়ার্সের হাতি পুজো : হাতি পুজো17ই সেপ্টেম্বর শনিবার ডুয়ার্সের বিভিন্ন স্থানে দেখা গেলো হাতি পুজা। সকাল থেকেই মাহুতদের ব্যস্ততা ছিলো তুঙ্গে। মেটেলি ব্লকের গাছবাড়িতে স্নানের পর সাজানো হয় সূর্য, কাবেরি, হিলারি, চম্পা, বসন্ত ও শ্রাবণী -দের, এছাড়া রামশাইয়ের শিলাবতী এবং ফুলমতি সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন বনাঞ্চলে সকল নিয়ম-রীতি মেনে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়েই সম্পন্ন হয় হাতি পুজো।এই পুজোর আয়োজনে বনকর্মীদের সাথে অংশগ্রহণ করে স্থানীয় বনবাস্তির মানুষ। উপস্থিত পর্যটকদের কাছেও এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। এদিন উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যায় গরুমারা, ধূপঝোরা, মেদলা সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন হাতি পিলখানায়। বনকর্মীদের কাছে এই কুনকি হাতি-ই হলো নজরদারির অন্যতম সঙ্গী। বনকর্মীদের কথায় সারাবছর যাদের পাহাড়ায় থাকে সমগ্র বনাঞ্চলসহ পার্শ্ববর্তী বণবস্তী, আজ তাদেরই পুজা সম্পন্ন হলো।