
জিতিয়া পূজা
লোকসংস্কৃতি
আশ্বিন মাসে কৃষ্ণপক্ষে অষ্টমী তিথিতে হিন্দু শাস্ত্রমতে জীমূতবাহনের বা বিষ্ণু দেবতার পূজা প্রচলন রয়েছে। মালদহ জেলার মানিকচক ছারাও বাঁকুড়া বীরভূম,পুরলিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে মহিলারা উপবাস থেকে স্বামী সন্তানের কল্যান কামনায় জীমূতবাহনের পূজা করে থাকেন। প্রতিবেশী রাজ্য বিহার ঝারখন্ড, উড়িষ্যার বিভিন্ন প্রান্তে এই লোকসংস্কৃতি লক্ষ্য করা যায়।
কথায় আছে জিতার ডালায় বোধন আসে। তাই জিতাষ্টমীতেই শুরু হয় বোধন,আর এর পনেরো দিন পর দূর্গাষ্টমী। উত্তরবঙ্গেও
বিশেষত ডুয়ার্সের লোহরা, ওঁরাও প্রভৃতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের স্ত্রীলোকেরা আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষে অষ্টমী তিথির দুদিন আগে থেকে নির্জলা উপবাস থাকে। উল্লেখ্য যিনি ব্রতী মহিলা তিনি থুতু পর্যন্ত না গিলে তিন দিন কাটান। তৃতীয় দিনে অর্থাৎ অষ্টমীর দিনে জিতিয়া পূজা করে থাকেন। জিতিয়া আসলে বিষ্ণু দেবতা। আদিবাসীরা বিষ্ণু দেবকে প্রকৃতি রূপে পূজা করে থাকেন। বুঝতে অসুবিধা নেই যে জিতিয়া পূজা পালন করা অত্যন্ত কষ্টকর ব্যাপার। অনেকে মিলে পূজা করা হলে নির্দিষ্ট মাঠে পিপুল (অশ্বত্থ) গাছের গোড়ায় পূজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র পারিবারিক পুজোর ক্ষেত্রে পিপুল (অশ্বত্থ) গাছের ডাল সংগ্রহ করে বাড়ির উঠোনে পুঁতে সেখানে পুজো করা হয়ে থাকে, কখনও ধান গাছ, আঁখ গাছও লক্ষ্য করা যায়। পুজোতে ডালপাতা সমেত শশাকে সন্তানজ্ঞান করে সধবা স্ত্রীলোকেরা সন্তানের ও স্বামীর মঙ্গল কামনা করে থাকেন। মাঠে স্থায়ী পিপুল গাছ তলায় পুজো হলে দেবতা ভাসান হয় না। তবে বাড়িতে পিপুল গাছের ডাল পুঁতে পুজো হলে পূজান্তে পূজাপ্রাপ্ত ডালকে নদীর বা পুষ্কুরিনীর জলে ভাসান দেওয়া হয়।